আইসোটেকের প্রযুক্তি পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ কেন্দ্র উপকূলে আশার আলো

আইসোটেকের প্রযুক্তি পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ কেন্দ্র উপকূলে আশার আলো

মোঃ হাইরাজ বরগুনা প্রতিনিধি ঃ বরগুনার তালতলী উপজেলায় নিশান বাড়িয়া নির্মানাধীন আইসোটেকর প্রযুক্তি, পরিবেশ বান্ধব ৩৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র দক্ষিন বাংলায় দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাবে। দূর হবে লোডসেডিং এ বিদ্যুতকেন্দ্রটি ২০২২ সালে উৎপাদনে যাবে। সরকার থেকে অপেক্ষাকৃত কম দামে বিদ্যুৎ আসবে। আইসোটেকের মতো নতুন প্রযুক্তি নির্ভর, পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোই দেশকে আলোকিত করবে, সচল রাখবে পরিবেশের ভারসাম্য । বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকার নিরবচ্ছিন্নভাবে মানসপন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ১৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চলতি বছরেই উৎপাদনে আসবে। আগামী বছর থেকে ধীরে ধীরে বড় কেন্দ্রগুলো উৎপাদন শুরু করবে। আর আইসোটেকের নির্মিয়মান বরগুনার তালতলীর তাপ বিদ্যুতকেন্দ্রটি ২০২২ সালে উৎপাদনে যাবে। এগুলো থেকে অপেক্ষাকৃত কম দামে বিদ্যুৎ আসবে। আইসোটেকের মিডিয়া অ্যাডভাইজার ফিরোজ চৌধুরী জানিয়েছেন, দেশের বিদ্যুৎ খাতকে পূর্ণতা দিতে বরগুনার তালতলী উপজেলায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চীনের পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেডের সঙ্গে যৌথভাবে দেশীয় সংস্থা আইসোটেক নির্মাণ করছে ৩৫০মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষম কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক এ প্রকল্প থেকে ২০২২ সাল নাগাদ খুব অল্প মূল্যে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে এখানকার উৎপাদিত বিদ্যুৎ। ২৫ বছর এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পরিবেশের ক্ষতি না করে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালিত হবে এই এলাকায় শুধু বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট নয়, সেখানে কর্মরতদের ও স্থানীয়দের জন্য ৫০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ হবে। স্কুল, কলেজ, ও ধর্মীও উপসনালায় করা হবে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে সাড়ে তিন হাজার দক্ষ অ দক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে কিছুটা কমবে বেকারত্বের হার। প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মো. শরীফ হোসাইন জানিয়েছেন, এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির সময়ে, সপন্ন হবার পরে, উৎপাদনের সময়ে যেন পরিবেশের কোন ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে মূল পরিকল্পনায় নানা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি সরলীকরণ করে জানিয়েছেন, কয়লা পরিবহনে কয়লার গুড়ো, বালুসহ সলিড ডাস্ট ব্যবস্থাপনার জন্য প্রকল্প এলাকার সকল রাস্তাঘাটা কংক্রিটের তৈরি হবে। ইলেকট্রো স্ট্যাটিক প্রিসিপিটেটর (ইএসপি) পদ্ধতিতে ডাস্ট সংগ্রহে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও কর্মপদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। চিমনি দিয়ে যে ধোঁয়া ও ময়লা নির্গত হবে তা হবে সহনীয় মাত্রায় ও সালফার মুক্ত। বিশ্বব্যাংক এর সুপারিশ মোতাবেক আইএফসি ইএইচএস মানদন্ডে ফ্লু গ্যাস ডিসালফারাইজেশন সিস্টেম নির্মাণ করা হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বয়লারগুলো এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে তাতে সর্বনিন্ম পর্যায়ে নাইট্রোজেন অক্সাইড সমূহ পুড়বে। চিমনিগুলো আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে সর্বোচ্চ উচ্চতার করা হবে এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিত্যক্ত পানিকে ট্রিটমেন্ট করে তা কেন্দ্রের বাইরে সরানো হবে। নদীও সাগরের নোনা পানিকে বিশুদ্ধ ও মিষ্টকরণ প্লান্ট স্থাপন করা হবে। দূষন হ্রাসকরণ প্রক্রিয়াকে চলমান রাখার জন্য নিয়মিত মনিটরিং সেল সচল থাকবে। সরেজমিনে দেখা গেছে,বিদ্যুৎ কেন্দ্র টি টেংরাগিরি বনাঞ্চল থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে মোট ১শ’ ৭০ একরের এ প্রকল্পের ভূমি ২০২২ সালের শুরু থেকেই উৎপাদনে যাবে বলে জানিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ‘বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড’ নামের প্রকল্পটির ব্যাপারে গত বছরের ১২ এপ্রিল বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তি হয়। বিদূৎ কেন্দ্র টি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে চীনের ‘পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড’ ও বাংলাদেশের আইসোটেক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আইসোটেক ইলেট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেড’। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। মোট ৩০০ একর জমির উপর নির্মিতব্য এই প্ল্যান্ট থেকে চুক্তি অনুযায়ী সরকারকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ধরা হয়েছে ৬.৭৭ টাকা। তবে কয়লার দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের সর্বনিম্ন দাম পড়বে ৪ টাকা। দেশে কমেযাবে লোড শেডিং প্রযুক্তি নির্বর তাপ বিদূৎ কেন্দ্রটি বাংলাদেশে কে নিয়ে যাবে অনন্য উচ্চতায়৷